সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের ঝিনাইদহর সাংসদ আনোয়ারুল আজিমের হত্যার তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আনোয়ারুলের হত্যার পিছনে কী কোনও রাজনৈতিক কারণ রয়েছে? এখন জোরাল হচ্ছে এই প্রশ্নই। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আওয়ামি লিগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই খুনের মাস্টারমাইন্ড হিসাবে উঠে এসেছে আমেরিকার নাগরিক আক্তারুজ্জামান শাহিনের নাম। যে এখনও পলাতক। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে শাহিনের আড়ালে কি কলকাঠি নেড়েছে অন্য কেউ। যার কিনারা করতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছেন দুদেশের গোয়েন্দারা।
আনোয়ারুলের হত্যাকাণ্ড যুক্ত থাকার সন্দেহে গত ৯ জুন ঝিনাইদহ পৌর আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজি কামাল আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। দেশের পশ্চিমের সীমান্ত জেলা ঝিনাইদহের রাজনীতির মাঠে আনোয়ারুল না থাকায় অন্য কোনও নেতা আখের গোছাতে পারেন সে দিকে দৃষ্টি রেখে গোয়েন্দা বিভাগ। এই খুনের ঘটনায় এবার শাসকদলের ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে আটক করা হয় মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি থেকে। আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চোরাচালানকেন্দ্রিক দ্বন্দ্বসহ বেশ কয়েকটি কারণ সামনে রেখে তাঁরা রহস্য ভেদের চেষ্টা চালাচ্ছেন। আনোয়ারুলে হত্যার পরপরই নাকি ঝিনাইদহের কয়েকজন আওয়ামি লিগ নেতার মোবাইল ফোনে খুনিরা কলকাতা থেকে বার্তা পাঠিয়ে লিখেছিল,‘মিশন সফল’। ধৃত কাজি কামালের ফোনেও সেই মেসেজ যায়। এমনকি খুনিরা তাঁর ফোনে আনোয়ারুলের নিথর দেহের ছবিও পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে মৃত সাংসদের পরিবারের সন্দেহ, রাজনৈতিক বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তাঁরা সাইদুল করিম মিন্টু ও কাজি কামাল-সহ আরও কয়েকজনকে সন্দেহ করছেন। আনোয়ারুলের মেয়ে মুমতারিন ফিরদৌস ডরিন বলেছেন, “আক্তারুজ্জামান শাহিনের সঙ্গে আমার বাবার কোনও ব্যবসা ছিল না। সে আমার বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধুও নয়। আমার বাবার হত্যার সঙ্গে যত বড় নেতাই জড়িত থাকুক না কেন আমি তাদের বিচার চাই।”
আনোয়ারুলের দাদা এনামুল হক ইমান জানান, “হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে শাহিন নামে যাকে গোয়েন্দারা চিহ্নিত করেছেন, তাঁর পিসতুতো ভাই আওয়ামি লিগ নেতা কামাল গিয়াস বাবু। দলের জেলা সম্পাদক মিন্টুর সঙ্গে ছায়ার মতো থাকেন কাজি কামাল। ভাইয়ের মৃত্যুর পর আমাদের সান্ত্বনা দিতে কামালের গাড়িতে মিন্টু এসেছিলেন।” গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানতে পারে, দ্বন্দ্ব থেকে আনোয়ারুলকে কৌশল করে কলকাতায় নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার জন্য পাঁচ কোটি টাকায় খুনিদের ভাড়া করা হয়েছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.