Advertisement
Advertisement

বাংলাদেশের টেকনাফে আত্মসমপর্ণ ১০২ জন ইয়াবা পাচারকারীর

এদের মধ্যে ১০ জন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।

 Yaba smugglers surrender in Bangladesh
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:February 16, 2019 12:43 pm
  • Updated:September 12, 2023 3:49 pm  

সুকুমার সরকার, ঢাকা:  বাংলাদেশের টেকনাফে শনিবার আত্মসমপর্ণ করল ১০২ জন নিষিদ্ধ মাদক ইয়াবা পাচারকারী। এদের মধ্যে ১০ জন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ৩৫ জন ইয়াবা মাফিয়া ও বাকি ৫৫ জন ডিলার রয়েছে। অভিযুক্তদের প্রত্যেকের নামে তিনটি থেকে ১৬টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে বলে স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম এই ধরনের ঘটনা ঘটল।

মায়ানমার থেকে নিষিদ্ধ মাদক ইয়াবা ট্যাবলেট পাচারের প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত টেকনাফের পাইলট স্কুলের মাঠে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র সচিব মুস্তাফা কামালউদ্দিন ও বাংলাদেশ পুলিশের আইজি মহম্মদ জাভেদ পাটোয়ারি। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন ধরেই টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় এই আত্মসমপর্ণের অনুষ্ঠানে হাজির থাকার জন্য স্থানীয়দের মধ্যে প্রচার চালানো হচ্ছিল। গতবছর মে মাস থেকে টেকনাফ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ মাদক পাচারের অভিযোগে প্রায় ২৫,০০০ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার মধ্যেই কিছুদিন আগেই একসঙ্গে ৩০০ জন গ্রেপ্তার হয়। এই তালিকায় টেকনাফেরও ৪০ জন বাসিন্দা রয়েছে।

Advertisement

সূত্রের খবর, আজকে যারা আত্মসমপর্ণ করল তাদের গত ১০ জানুয়ারি থেকে কক্সবাজার পুলিশ লাইনের সেফ হাউসে রাখা হয়েছিল। আত্মসমপর্ণের অনুষ্ঠানের পর তাদের বিরুদ্ধে কড়া কোনও শাস্তির ব্যবস্থা না করা হলেও সাধারণ আইন অনুযায়ী মামলা চলবে। আত্মসমপর্ণ করতে চলা মাদক কারবারীদের পরিবারগুলির পক্ষ প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানো হলেও স্থানীয়দের মধ্যে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়েছে। নুরুল বাশার নৌশাদ নামে এক মাদক কারবারীর বাবা মহম্মদ ইউনুস বলেন, “আমি খুব খুশি। আশাকরি আত্মসমপর্ণের পর পুলিশের হেফাজতে আমার ছেলে সুরক্ষিতই থাকবে।”

যদিও ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন পালংখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গাফুরউদ্দিন চৌধুরি। তাঁর মতে, আত্মসমপর্ণের এই প্রহসন শেষ হলেই নতুন করে প্রচুর মানুষ ইয়াবা পাচারের ব্যবসায় যোগ দেবে। মাদক কারবারে অভিযুক্ত মাফিয়াদের যেখানে আদালত বা পুলিশ স্টেশনে আত্মসমপর্ণ করানো উচিত ছিল সেখানে কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের সুরক্ষিত জায়গায় রাখা হয়েছিল। এখন লোক ডেকে ঘটা করে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আত্মসমপর্ণ করানো হচ্ছে। এর ফলে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বাকিদের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাদেরও মনে হবে যে নিষিদ্ধ মাদকের ব্যবসা করে পরে যদি আত্মসমপর্ণ করা হয় তাহলে কড়া শাস্তির হাত থেকে বাঁচা যাবে। তবে এই কথা উড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকরা। তাঁদের মতে, বড় বড় পাচারকারী আত্মসমপর্ণ করার পরে নতুন ডিলারের সংখ্যা ৫০০ জনের বেশি থাকবে না। তাদের খুব সহজেই কন্ট্রোল করা যাবে।

অনুষ্ঠানের আগে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, আমরা কিছু নতুন নাম পেয়েছি। আত্মসমপর্ণের অনুষ্ঠানের পর সেগুলি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা আশা করছি আজ ১০০ জনের আত্মসমপর্ণ করার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে সংখ্যাটা আরও বাড়বে। ফলে মাদক পাচারকারীর সংখ্যা আরও কমবে। তবে আত্মসমপর্ণের পরেও যদি কেউ ফের নিষিদ্ধ মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

[কলকাতায় ছড়িয়ে জইশের জাল! কোথায় গেল শিয়ালদহের ‘চাচা’?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement