সুকুমার সরকার, ঢাকা: ডেঙ্গুর জেরে বাংলাদেশে প্রায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে মানুষ। ইতিমধ্যে মৃতের সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে বুধবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যদিও বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা ১০০ জনের বেশি। বুধবারই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এবছর এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৩২ হাজার ৩৪০ জন। এর মধ্যে গতকাল একদিনে সর্বোচ্চ ২৪২৮ জন আক্রান্ত হয়েছে। এডিস মশা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এ মৃত্যু মিছিল থামবে না বলেই আশঙ্কা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ২২টি হাসপাতাল দিলেও এ বছর সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি সব মিলিয়ে ৪০টি হাসপাতাল ডেঙ্গুর তথ্য দিচ্ছে। কিন্তু, এর বাইরে আরও অনেক হাসপাতাল আছে যেগুলো তথ্য দেয় না। ফলে ডেঙ্গু রোগীর সঠিক তথ্য তারা দিতে পারছে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ এমারজেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে গতকাল বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত ৩২ হাজার ৩৪০ জন মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতি হয়েছে। এদের মধ্যে ৮ হাজার ৭০৭ জন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে রয়েছে। আর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে ২৩ হাজার ৬১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে হাসপাতালে ভরতি হয়েছে ২ হাজার ৪২৮ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ২৭৫ এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ১৫৩ জন মানুষ রয়েছে।
ঢাকা বিভাগের জেলাগুলিতেই সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এসব জেলার হাসপাতালগুলিতে ডেঙ্গু নিয়ে ভরতি হয়েছে ২৯৯ জন। এর আগে ২০১৮ সালে ১০ হাজারের বেশি ডেঙ্গু রোগী ভরতি হয়েছিল হাসপাতালে। এবার সাতমাসেই সে রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সারাদেশে ৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে প্রশাসন। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ পুরসভার জন্য বরাদ্দ ১৫ কোটি টাকা। বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
তিনি জানান, ঢাকার দুটি সিটি কর্পোরেশন ছাড়া বাইরের ১০টি সিটি কর্পোরেশন পাচ্ছে ৮ কোটি টাকা এবং সব পুরসভার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মশার প্রকোপ বেশি, সে বিবেচনায় ১ হাজার ৬০০ কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। আর উত্তর সিটি কর্পোরেশনে চাহিদা অনুযায়ী নিয়োগ চলছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.