সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের রক্ত ঝরল বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে। এক যুবককে ডেকে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এই শিবিরে নানা এলাকা দখল ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিত্যদিন হানাহানি লেগেই রয়েছে। ক্যাম্পের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে উখিয়া ক্যাম্প ১৭-সি ব্লকে ঘটনাটি ঘটেছে। উখিয়ার রোহিঙ্গা (Rohinga) ক্যাম্পে থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় মহম্মদ আবদুল্লা (২৩) নামের এক যুবককে। তার পর তাঁকে গুলি করে হত্যা করে দুষ্কৃতীরা। এই বিষয়ে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক (ওসি) মহম্মদ শামীম হোসেন বলেন, কাজের কথা বলে এদিন ভোরে আবদুল্লাকে ঘর থেকে ডেকে নেয় অজ্ঞাত পরিচয়ের কয়েকজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী। পরে ক্যাম্প-১৭ এর সি/৭৮ ব্লকের বাজারের রাস্তার উপর তাঁর বুকে গুলি করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। খবর পেয়ে অন্যান্যদের সহযোগিতায় গুলিবিদ্ধ যুবককে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় আবদুল্লার। নিহতের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের পাঠানো হয়েছে। এর আগেও অন্তত দেড়শোর উপর রোহিঙ্গা নেতা, উপনেতা ও সাধারণ মানুষ খুন হয়েছেন।
বলে রাখা ভালো, বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির রয়েছে কক্সবাজারে। সেনা অভিযানে মায়ানমার থেকে বিতারিত হয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার শরণার্থী শিবিরগুলোত আশ্রয় নিয়েছেন সাড়ে ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী। হিংসা, মানবপাচার এবং মাদক কারবারের কারণে ভয়ানক হয়ে উঠেছে সেখানকার পরিস্থিতি। সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সংঘর্ষ কেড়ে নিয়েছে অনেকের চোখের ঘুম। নিজেদের গোষ্ঠীর মানুষদের হাতেই প্রাণ হারাচ্ছেন তাঁরা। মায়ানমারে রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে পারবে কি না সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়। এর মধ্যে এলাকা দখলের লড়াইয়ে নেমেছে আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি (আরসা), দ্য রোহিঙ্গা সোলিডারিটি অর্গানাইজেনশন (আরএসও)-এর মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো।
ক্যাম্পে কোনও ভবিষ্যৎ না থাকায় অনেক রোহিঙ্গা এখন ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথে পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোতে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে। ফলে সমুদ্রে নৌকাডুবি হয়ে ঘটেছে বেশ কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনা। রোহিঙ্গারা যে সময় সমস্যায় পড়েছিল তখন তাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছিল বাংলাদেশ। তবে ক্রমে ঢাকার জন্য বড়সড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শরণার্থীদের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.