অর্ণব দাস, বারাসত: লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024) আগে বিস্ফোরক বারাসতের তারকা বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। ভরা জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি রাজনৈতিক সন্ন্যাসের কথা শোনালেন। সাফ বক্তব্য, “যতবার আমি হাতজোড় করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) বলি, আমাকে ছেড়ে দিন, এটা আমার কাজ নয়, আমি এই যুদ্ধের সেপাই নই। কিন্তু কেন জানি না, উনি আমাকে ছাড়েন না। তবে এবার আমি কথা দিচ্ছি, আর নয়, আমি এবার ছাড়ব।” এর পর অবশ্য জনতার সমবেত দাবির মুখে চিরঞ্জিত হেসে বলেন, “কিন্তু যেতে তো পারি না, মনটা এখানে পড়ে থাকে।”
বৃহস্পতিবার বারাসতে (Barasat), নিজের কেন্দ্রে একটি চিকিৎসা কেন্দ্রের উদ্বোধনে গিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী (Chiranjeet Chakraborty)। সেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের সদর্থক পদক্ষেপের প্রশংসা করেন, তা নিয়ে জনসমর্থনও টানার চেষ্টা করেন। তৃণমূল সরকারের প্রতিটি সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা তুলে ধরেন জনসভায়। এর পর তিনি যান বারাসত পুরসভার ৩০নম্বর ওয়ার্ডের অনুষ্ঠানে। সেখানে প্রাচীন ল্যালেঙ্গা পুকুর সংস্কার, সৌন্দর্যায়ন-সহ আলো লাগানোর কাজ হয়েছে সদ্য। তার প্রশংসা করেন তারকা বিধায়ক।
সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আচমকা তিনি বলে বসেন, ”যতবার আমি হাতজোড় করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলি, আমাকে ছেড়ে দিন, এটা আমার কাজ নয়, আমি এই যুদ্ধের সেপাই নই। কিন্তু কেন জানি না, উনি আমাকে ছাড়েন না। আর আপনারাও আমার কাজ বাড়িয়ে দেন। আমি চাই না, এখানে থাকতে। আর আপনারা ভোট দিয়ে আমাকে জিতিয়েই দেন। কিন্তু এবার আর নয়। আমি আমেরিকায় মেয়ের কাছে গিয়ে বসে থাকব। আসবই না এখানে।” লোকসভা ভোটের আগে তাঁর এই ‘রাজনৈতিক সন্ন্যাস’ বার্তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
বারাসতের বিধায়ক হিসেবে টলি নায়ক চিরঞ্জিতের হ্যাটট্রিক হয়েছে। ২০১১ সালে তৎকালীন বাম সরকারের পতনের অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন তিনি। সেবারই প্রথম বারাসতের বিধায়ক হন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মোটের উপর সুনজরে থাকলেও এলাকার উন্নয়নে চিরঞ্জিতের দাবিদাওয়ায় ইদানিং ক্ষুব্ধ নেত্রী। একবার বারাসতের প্রশাসনিক বৈঠকে চিরঞ্জিতের স্টেডিয়ামের দাবি শুনে মমতা কার্যত ধমক দেন। সেই কারণেই নাকি অন্য কোনও কারণে রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চান বিধায়ক, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.