নিজস্ব চিত্র।
সুমন করাতি, হুগলি: চলচ্চিত্র জগতের এক সময়ের বন্ধু। এখন তাঁরা দুই যুযুধান রাজনৈতিক দলের প্রার্থী। তৃণমূলের হুগলি লোকসভা (Hooghly Lok Sabha) আসনে প্রার্থী হয়েছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (Rachna Banerjee)। এই লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। ভোটপ্রচারে নেমে একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছেন। তবে দিন শেষে তাঁরা যে ‘বন্ধু’ হয়েই থাকতে চান, সেই দাবি করলেন উভয়েই।
ভোটের প্রচারে বুধবার হুগলির চুঁচুড়়াতেই (Chinsurah) প্রচার চালিয়েছেন রচনা এবং লকেট ৷ একসময়ে বহু বাংলা ছবিতেই একসঙ্গে অভিনয় করেছেন তাঁরা ৷ সে কথা মনে করিয়ে দিয়েই রচনা বলেন, “দুজনে কত ভালো ভালো ছবি করেছি। এখনও যদি আমি আর লকেট সামনাসামনি বসি তাহলে রাত কেটে গেলেও আমাদের কথা শেষ হবে না।” শুধু তাই নয়। স্মৃতির সরণি বেয়ে তৃণমূলের তারকাপ্রার্থীর সংযোজন, “আমরা যখন সিনেমা করতাম, আমাদের বন্ডিংটা ভীষণ স্ট্রং ছিল। যখন আউটডোর শুটিংয়ে, আমরা পাঁচ-ছয় জন শিল্পী একসঙ্গেই থাকতাম। আমি, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, লাবণী সরকার, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রঞ্জিত মল্লিক। আমদের একটা গ্রুপ ছিল। শুটের পরে জমিয়ে আড্ডা চলত। হয়তো প্রসেনজিৎ হারমোনিয়াম বাজাচ্ছে, লকেট গান করছে, আমি তবলা বাজাচ্ছি- এরকমও হয়েছে। সেই স্মৃতিগুলো খুব ভাল ছিল। আমি সেই স্মৃতি নিয়েই লকেটকে আমার কাছে রাখতে চাই।”
রচনার মন্তব্য কানে যেতেই পালটা সৌজন্য দেখিয়েছেন লকেট৷ বিজেপি প্রার্থী বলেন, “রাজনীতির বাইরে আমার যে কজন বন্ধু আছেন, তাঁদের কাছে আমি সাংসদ না। আমি সেই লকেটই আছি। আমি আমার পরিচয়টা সেরকম সাধারণই রাখতে চাই। আমি আজ সাংসদ। কাল কী হবে জানি না! দশ বছর অভিনয়ের জায়গাটা ছেড়ে এসেছি, তাই যোগাযোগটা হয়তো একটু কমে গিয়েছে কিন্তু স্মৃতি আজও অটুট। আমি চাই ব্যক্তিগত সম্পর্কে যেন রাজনীতির আঁচ না আসে।আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক যেন ভালো থাকে। রাজনীতি মানে কেউ কাউকে গালিগালাজ করা নয়, ভুল ধরিয়ে দেওয়া নয়। আমরা মানুষের জন্য কাজ করতে এসেছি। যে যাঁর বিচারধারা নিয়ে সেই কাজ করছি।”
বিজেপি সাংসদ আরও বলেন, “আমার মনে হয়েছে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নরেন্দ্র মোদির বিচারধারা কাজ করবে। রচনার মনে হয়েছে তাই উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে গিয়েছেন। আগামী দিনে মানুষ ঠিক করবে কার বিচারধারা ঠিক? মানুষের কাজ করা অনেক কঠিন। এখানে মানুষের যন্ত্রনা, দুঃখ অনেক বেশি। আমি ওঁকে স্বাগত জানিয়েছি। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশ যেভাবে এগিয়ে চলেছে, তাতে একদিন না একদিন হয়তো আমার সঙ্গে উনিও ভারতীয় জনতা পার্টিকে সমর্থন করবেন।” বাংলার বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশে রচনা-লকেটের এই সৌজন্য প্রায় বিরল বললে ভুল বলা হবে না। তবে দুই অভিনেত্রীর মধ্যে হুগলিতে শেষ হাসি কে হাসবেন? সেটাই এখন দেখার ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.