কল্যাণ চন্দ ও ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের বেসুরো ভরতপুরের তৃণমুল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayaun Kabir)। বহরমপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী, প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে তাঁর নাপসন্দ! নিজেই নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়াইয়ের হুঙ্কার দিলেন। মঙ্গলবার বিধানসভায় এসে সাফ জানালেন, এই সম্ভাবনা প্রবল। বহরমপুরের (Baharampur) পাঁচবারের সাংসদ অধীর চৌধুরীকে হারাতে ‘খেলোয়াড়’কে নামানো কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন তুলে দিলেন হুমায়ুন কবীর।
সোমবার জেলা নেতৃত্বের দলীয় বৈঠক ছিল। সেখানেই দলের বর্ষীয়ান নেতা তথা হরিহপাড়ার তৃণমূল (TMC) বিধায়ক নিয়ামত শেখকে পাশে নিয়ে হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য, ”আমরা পদে পদে অপমানিত হয়েছি। সময়মতো সেটা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। জেলার অনেক বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা বসে গিয়েছেন। এখন অনেক সময় বাকি। যা কিছু ঘটতে পারে, অপেক্ষা করুন।” এখানেই বোঝা গিয়েছিল বিস্ফোরক কিছু ঘটাতে চলেছেন তিনি। আর মঙ্গলবার বিধানসভায় নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করলেন ভরতপুরের বিধায়ক। বললেন, নির্দল প্রার্থী হিসেবে তাঁর ভোটে লড়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাতে যে দলীয় নেতৃত্ব কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে, তা নিয়ে আদৌ ভাবিত নন হুমায়ুন। সাফ জানালেন, ”ওসব নিয়ে ভাবিত নই। সব কিছুর জন্য আমি প্রস্তুত।” তবে কি এবার বহরমপুরে ইউসুফ পাঠান-অধীর-হুমায়ুন ত্রয়ীর লড়াই হবে? এই উত্তর পেতে আর খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না।
২০১৪ লোকসভা ভোটে বহরমপুরে তৃণমূলের তরফে প্রার্থী করা হয়েছিল রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে। সেই সময় তৃণমূল প্রার্থীর চেয়ে তিন লক্ষের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছিলেন অধীর চৌধুরী। ইন্দ্রনীল সেন পরাজিত হওয়ার পর হুমায়ুন কবীরের একের পর এক বিরোধী বক্তব্যের জেরে তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করেছিল তৃণমূল। তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়ে ২০১৯ সালে মুর্শিদাবাদ লোকসভার বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তৃণমূলের কাছে পরাস্ত হয়ে ফের ঘাসফুল শিবিরে ফিরে আসেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ভরতপুরের তৃণমূলের টিকিট পান হুমায়ুন। সেখানকারই তিনি।
চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে ফের বেসুরো হয়ে উঠলেন হুমায়ুন কবীর। বহরমপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানের নাম ঘোষণার হতেই তিনি অধীরের বিরুদ্ধে পাঠানের লড়াইয়ের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন। প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের পাশাপাশি দলীয় নেতৃত্বকে তোপ দাগলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ২০১৬ সালে তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের একটা অংশ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল, যাতে তিনি বিধানসভার টিকিট না পান। তবে দলের শীর্ষ নেতাদের তো অনেক ক্ষমতা। তাই প্রার্থী ঘোষণার আগে কারও সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজনই মনে করেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.