ফাইল ছবি।
অর্ণব দাস, বারাকপুর: বিজেপিতে থাকাকালীনই বারাকপুরের ‘বাহুবলী’ সাংসদ অর্জুন সিংয়ের (Arjun Singh) বিরুদ্ধে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের চাপা ক্ষোভ ছিল। শুক্রবার দিল্লির সদর কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফের বিজেপিতে যোগদানের পর, লোকসভা ভোটের (2024 Lok Sabha Polls) নতুন করে শিল্পাঞ্চলের গেরুয়া শিবিরের ক্ষোভের বহিপ্রকাশ ঘটল। বুধবারের পর ফের শনিবারও বারাকপুর স্টেশনে অর্জুনের বিরোধিতায় পোস্টার পড়তে দেখা গেল। পোস্টারে লেখা হয়েছে ‘ভাগ অর্জুন ভাগ’। কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে, তা উল্লেখ করা না হলেও অর্জুন সিং এই ঘটনায় তৃণমূল প্রার্থী মন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন। যদিও রাজ্যের শাসক দলের তরফে এটকে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল বলেই দাবি করা হয়েছে।
বিজেপি গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ অস্বীকার করলেও সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাকপুর লোকসভার অন্তর্গত বিজেপির (BJP) ২৩টি মণ্ডল রয়েছে। প্রায় সবকটি মণ্ডলের নেতৃত্বই বুধবার রাত থেকে জেলা, রাজ্য নেতৃত্বদের কাছে অর্জুন বিরোধিতার কথা জানাতে শুরু করেছিল। বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য, তৃণমূল (TMC) অর্জুন সিংকে প্রার্থী না করায় প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে তিনি দল ছাড়েন। এর থেকেই পরিষ্কার, তিনি বিজেপিতে টিকিট পাওয়ার জন্যই যোগ দিয়েছেন। দলকে ভালবেসে নয়, ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতেই উনি ফের দল পরিবর্তন করছেন। অনেকেই বলছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে উল্লেখযোগ্য যোগদান পর্ব রাজ্যে বিজেপি কার্যালয়েই হতো। কিন্তু অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের বিরোধিতা থাকার কারণেই তাঁকে যোগদানের জন্য দিল্লি উড়ে যেতে হল।
২০১৯ সালের লোকসভায় নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে জয়ী হওয়ার পর থেকেই অর্জুন ঘনিষ্ঠরা সেটাকে ব্যক্তিগত কৃতিত্ব বলে বহুবার দাবি করেছিল। সেই কারণেই ফের তাঁকে বিজেপিতে যোগদান করানো হয়েছে বলে দাবি ঘনিষ্ঠদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন একজন জানান, বারাকপুর এলাকায় বিজেপির মুখ বলে কেউ নেই। অর্জুন সিং না থাকলে ২০১৯ সালেও বিজেপি বারাকপুর আসনটি জিততে পারত না। তাই ফের তাঁকে বিজেপিতে নেওয়া হল। সম্ভবত প্রার্থীও করা হবে। যদিও বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুণী পাত্র জানিয়েছেন, ”ব্যক্তি ক্যারিশ্মায় নয়, মানুষ ভোট দেবে মোদিজীর উন্নয়ন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য। ২০১৯ সালে এই কারণেই বারাকপুর কেন্দ্রের (Barrackpore Lok Sabha) বিজেপি প্রার্থী জয়ী হয়েছিল। ২০২৪ সালেও এই কারণেই জিতবে।”
তৃণমূল নেতৃত্ব আবার ফাল্গুণী পাত্রের এই মন্তব্যকে গোষ্ঠীকোন্দলের ইঙ্গিত বলেই কটাক্ষ করেছে। সবমিলিয়ে লোকসভা নির্বাচনে শিল্পাঞ্চলের গেরুয়া শিবির কতটা সক্রিয় হয় তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে। বিজেপির অন্দরের এই অসন্তোষ প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী তথা নৈহাটির বিধায়ক মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেছেন, ”অন্য রাজনৈতিক দলের সম্পর্কে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে আমি বিশ্বাস করি, যারা দীর্ঘসময় ধরে একটা পার্টি করে, সেই লোকগুলোকেই দলের সম্মান জানানো উচিত। তাঁদেরই দায়িত্ব দেওয়া উচিত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.