সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: সাহিত্য জগৎ নিয়েই থেকেছেন বরাবর। রাজনীতির আশেপাশেও ছিলেন না। নিজের সাহিত্য কীর্তির জন্য ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। পেয়েছেন রাজ্য সরকারের ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কার। আদিবাসী সমাজে সমাদৃত সেই ব্যক্তিত্বই এবার লোকসভার লড়াইয়ে (2024 Lok Sabha Polls)সৈনিক হিসেবে এগিয়ে দিল রাজ্যের শাসকদল। চব্বিশের ভোটে ঝাড়গ্রাম (Jhargram)কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে কালীপদ সোরেনের নাম। তাতে খুশি জেলাবাসী। এবার খ্যাতনামা এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে গেরুয়া শিবির কাকে লড়াইয়ে নামায়, সেটাই এখন দেখার।
সাঁওতালি সাহিত্য জগতের নক্ষত্র কালীপদ (খেরওয়াল) সোরেন ‘পদ্মশ্রী’ (Padmasree) সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন। এবার তিনি রাজনীতির ময়দানে। ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। রবিবার ব্রিগেড সমাবেশ থেকে তাঁর নাম ঘোষণা হয়েছে। খেরওয়াল সরেনের প্রকৃত নাম কালিপদ সোরেন । তিনি ঝাড়গ্রাম শহরের রঘুনাথপুরের বাসিন্দা। সাঁওতালি সাহিত্য জগৎ তাঁকে ‘খেরওয়াল সোরেন’ নামে চেনে। ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান এর প্রাপক খেরওয়াল সরেন সমাজকে নেশা মুক্ত করার পণ নিয়েছেন।
১৯৫৭ সালে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার ঝাড়গ্রাম মহকুমার রঘুনাথপুরে জন্মগ্রহণ করেন খেরওয়াল সরেন । জীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বড় হয়ে ওঠেন তিনি । নিজের একাগ্রতা ও জেদে পঠনপাঠন চালিয়ে যান । তিনি ১৯৭৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন তারপর সেবা ভারতী মহাবিদ্যালয় থেকে ১৯৮১ সালে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেনক। ১৯৮৪ সালে কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্য়ালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন । তার পরেই কলকাতায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন । কর্মজীবনের মধ্যেই তিনি তাঁর সাহিত্যচর্চা চালিয়ে যান। ১৯৮৪ সালে সাঁওতালি ভাষায় ‘রিমিল’ নামে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশিত করেন । এই ভাবেই তিনি তার যাত্রাপথ শুরু করেন । সাঁওতালি ভাষায় তিনি নাটক, সাহিত্য ,কবিতা রচনা করতে থাকেন। মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন খেরওয়াল সরেন।
১৯৯২ সালে তিনি প্রথম পুরস্কৃত হন। অল ইন্ডিয়া সাঁওতালি রাইটার অ্যাসোসিয়েশন তাঁকে পুরস্কৃত করেন। ২০০৪ সালে পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু পুরস্কারে পুরস্কৃত হন তিনি । ২০০৫ সালে সাঁওতালি অ্যাকাডেমি সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। ২০০৭ সালে তিনি সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার পান । এই ভাবেই তিনি সাঁওতালি সাহিত্য জগতের একে একে পুরস্কার পেতে থাকেন। তিনি পদ্মশ্রীতে ভূষিত হন। ঝাড়গ্রাম জেলায় প্রথম পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপক খেরওয়াল সরেন।
ঝাড়গ্রামের বড় চান্দাবিলা স্টেট ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন। সিনিয়র স্পেশাল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন ২০১৭সালে। দুই ছেলে এক মেয়ে। স্ত্রী মাকুরানি সরেন। বই লিখেছেন ৪২ টা গল্প, নাটক, কবিতা, রম্য রচনা। ঝাড়গ্রাম শহরের ভরতপুরে থাকেন তিনি। এবার সংসদ ভবনে যাওয়ার লড়াইয়ে নামছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.